কক্সবাজারের টেকনাফ থেকে সমুদ্রপথে মিয়ানমারের রাখাইনে পাচারকালে বিপুল পরিমাণ ভোগ্যপণ্যসহ দুই পাচারকারীকে আটক করেছে র্যাব। ভোগ্যপণ্যের মধ্যে রয়েছে ৪ হাজার ৪৭০ লিটার ভোজ্যতেল সয়াবিন, বিভিন্ন প্রকারের ১ লাখ ৩৬ হাজার ৫৫০ পিস ওষুধ ও ৫০০ কেজি ময়দা।
মিয়ানমারে যুদ্ধ পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে চোরাকারবারিরা এসব পণ্য রাখাইনে পাচার করছিল বলে র্যাব জানিয়েছে।
কক্সবাজার র্যাব-১৫ ব্যাটালিয়নের মিডিয়া সেলের প্রধান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আবু সালাম চৌধুরী গতকাল মঙ্গলবার জানান, সাম্প্রতিক সময়ে মিয়ানমারের যুদ্ধ পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে কক্সবাজার জেলার সমুদ্রের বিভিন্ন চ্যানেল ব্যবহার করে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী ও পাচারকারী ভোজ্যতেল সয়াবিনসহ বিভিন্ন নিত্যপ্রয়োজনীয় ভোগ্যপণ্য, জ্বালানি তেল ও ডিজেল অবৈধভাবে চোরাইপথে পার্শ্ববর্তী দেশ মিয়ানমারে পাচার করছে। এতে করে একদিকে সরকার কোটি কোটি টাকার রাজস্ব হারাচ্ছে; একই সাথে খাদ্যদ্রব্য, অকটেন, ডিজেল ইত্যাদি দেশ হতে অন্য দেশে পাচার হওয়ার কারণে দেশে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি হচ্ছে। সরকারি রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে পার্শ্ববর্তী দেশে বিভিন্ন নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য পাচারের বিষয়টি র্যাব ১৫-এর নজরে আসায় এই চক্রের সদস্যদের গ্রেপ্তার এবং পাচাররোধে
র্যাবের গোয়েন্দা নজরদারি ও তৎপরতা বৃদ্ধি করা হয়।
তিনি জানান, গোপন সংবাদে র্যাব জানতে পারে কতিপয় পাচারকারী ভোজ্যতেল সয়াবিনসহ বিভিন্ন নিত্যপ্রয়োজনীয় ভোগ্যপণ্য নিয়ে টেকনাফ উপজেলার সদর ইউনিয়নের হাতিয়ারঘোনা এলাকায় একটি মুরগির খামারসংলগ্ন ভিটা এলাকায় অবস্থান করছে। প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে সোমবার রাতে র্যাব-১৫ টেকনাফ ক্যাম্পের একটি টিম ওই এলাকায় একটি বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে। এ সময় র্যাবের উপস্থিতি বুঝতে পেরে কৌশলে পলায়নের চেষ্টাকালে দুই পাচারকারীকে আটক করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আটককৃত পাচারকারীদ্বয় তাদের নাম-ঠিকানা প্রকাশ করে এবং পার্শ্ববর্তী দেশে পাচারের উদ্দেশ্যে ভোজ্যতেল সয়াবিন, ওষুধ এবং ময়দা মজুদ রাখে বলে স্বীকার করে। পরে মুরগির ফার্মে তল্লাশি চালিয়ে ১টি জিপগাড়িসহ ৮৯৫ বোতলে চার হাজার চার শত সত্তর লিটার ভোজ্যতেল সয়াবিন, বিভিন্ন প্রকারের এক লাখ ছত্রিশ হাজার পাঁচ শত পঞ্চাশ পিস ওষুধ ও ১০টি বস্তায় মোট পাঁচ শত কেজি ময়দা জব্দ করে। আটক পাচারকারী আব্দুল মান্নান ও আলী হোসেন টেকনাফ সদর ইউনিয়নের হাতিয়ারঘোনা এলাকার বাসিন্দা।
র্যাব জানিয়েছে, মিয়ানমারে সরকারি বাহিনীর সাথে আরাকান আর্মির মধ্যে চলমান সংঘাতের জেরে দেশটির রাখাইন রাজ্যে ওষুধ, জ্বালানি তেল ও খাদ্যপণ্যের সংকট দেখা দিয়েছে। এ নিয়ে একটি অসাধু ব্যবসায়ী চক্র বঙ্গোপসাগরের বিভিন্ন চ্যানেল ব্যবহার করে উচ্চমূল্যে এসব পণ্য ও মালামাল পাচারে সক্রিয় হয়ে উঠেছে। এতে সরকার রাজস্ব হারানোর পাশাপাশি দেশের স্থানীয় বাজারে কৃত্রিম সংকটের সৃষ্টি হচ্ছে।সুত্র আমাদের সময়
পাঠকের মতামত